আর কে আছে তুমি বিনে
কওরে প্রাণনাথ
এক পরাণে রাইতে দিনে
সইনারে আঘাত ॥
পর করে ঘরের মানুষ
কইরা ঘরের বার
তুমি কাছে নেওনা যদি
সাধ্য আছে কার।
জানে না লোক তুমি বিমুখ
নাই আগের জাগাত ॥
প্রেমে পইড়া গেছি মইরা
মিটলো না তিরাস
না আসিয়া ভিন বাসিয়া
কইরো না নিরাশ।
ঘরে বাদী কাল ননদী
আছে ও লাগাত ॥
মানছি অদিনস্ত পাগল
হাসানের সব দোষ
কোন পরাণে ভিন্ন বাস
আমি তো মানুষ।
কার্য আমার ধার্য্য তোমার
করুণা মা’গা ॥
Song: Aghat
Lyrics, Tune, Singer: Pagol Hasan
মতিউর রহমান হাসান যিনি সবার কাছে পাগল হাসান নামে পরিচিত, ছিলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে তিনি বড় হন। সংসারের টানাপোড়েনে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে হয়েছে তাকে। পরে সুনামগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুলে অফিস সহায়কের চাকরি নেন, তবে সংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগের কারণে তিনি পুরোপুরি গানে মনোনিবেশ করেন।
পাগল হাসান নিজেই গান লিখতেন, সুর করতেন এবং গাইতেন। তার গানের কথায় জীবনের দুঃখ-বেদনা ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া পাওয়া যায়। তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জীবন খাতা’, ‘আসমানে যাইয়ো না রে বন্ধু’, ‘আমি এক পাপিষ্ঠ বান্দা’, ‘রেলগাড়ির ইঞ্জিন’ ইত্যাদি। তিনি লালন ব্যান্ডের জন্যও ‘রুহানি’, ‘পাগলা ঘোড়া’ এবং ‘পাগলা চিনে না’ গানগুলো লিখেছিলেন।
২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের সুরমা সেতু টোলকেন্দ্রের পাশে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পাগল হাসান মৃত্যুবরণ করেন। তার অকাল মৃত্যুতে সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তার গানের মাধ্যমে পাগল হাসান মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছেন। তার সৃষ্টিকর্ম তাকে স্মরণীয় করে রাখবে।