ভব যাতনার ডাব্বা লইয়া
ঘুইড়া বেড়াই নিশিদিন
জীবন আমার রেল গাড়ির ইঞ্জিন।
মায়ের কোলে ছিলাম বালা
আদর ভাইনে ভাইনে
কে আমারে উঠাই দিলো
সমান্তরাল লাইনে।
ল’লক্করে ঘষাঘষি
আর চলেনা কষাকষি
কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাখুশি
ডাব্বা দিয়া লাগাই বিন।
জীবন আমার রেল গাড়ির ইঞ্জিন।
ইস্টিশন টু ইস্টিশনে
জংশনে অদরি
জানতাম না আসিলে ভবে
সইতে হয় দিকদারি।
মাইনে পায় তার তাবেদার
স্টেশন কর্মী টিটি চেকার
কালাধোয়া মাইরা বেটার
চলছে গাড়ি বিরামহীন ।
জীবন আমার রেল গাড়ির ইঞ্জিন।
কি সুখে হরণে বাজে উচ্চস্বরে সুর
দয়াল আমার ইস্টিশনের শেষটা কত দূর ?
ভেবে পাগল হাসন বলে
শুরু সেই ব্রিটিশ আমলে
সংসার নামের মায়াজালে
জীবন মরণ পরাধীন।
জীবন আমার রেল গাড়ির ইঞ্জিন।
Song: Jibon Amar Rail Garir Engine
Lyric, Tune, Singer: Pagol Hasan
মতিউর রহমান হাসান যিনি সবার কাছে পাগল হাসান নামে পরিচিত, ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন প্রতিভাবান সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। তিনি নিজেই গান লিখতেন, সুর করতেন এবং গাইতেন। তাঁর গানে মরমী ও বাউলিয়ানা ধারা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হত।
তাঁর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে “জীবন খাতা”, “আসমানে যাইয়ো না রে বন্ধু”, “আমি এক পাপিষ্ঠ বান্দা”, “রেলগাড়ির ইঞ্জিন” ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, তিনি লালন ব্যান্ডের জন্য “রুহানি”, “পাগলা ঘোরা” এবং “পাগল চিনে না” গানগুলো লিখেছিলেন।
২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল এক সড়ক দুর্ঘটনায় পাগল হাসান মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে সুনামগঞ্জসহ সারা দেশের সংগীতপ্রেমীরা গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তাঁর সৃষ্টিশীলতা ও সংগীতের প্রতি অবদান তাঁকে সুনামগঞ্জের মরমী সাধকদের উত্তরসূরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
